কক্সবাংলা রিপোর্ট :: কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ বিভিন্ন উপজেলায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কর্তৃক ২০২৩ সালে ১৬৩ জন এবং ২০২৪ সালে অদ্যাবধি পর্যন্ত ৮৬ জন নির্মমভাবে হত্যাকান্ডের শিকার হয়।
এছাড়াও রামুতে কয়েকটি হত্যাকান্ড ও চোরাচালান চক্রের দুইটি গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সশস্ত্র সংঘর্ষ ও হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
এ সকল হত্যাকান্ডে দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি বিদেশী অস্ত্রে ব্যবহার হয়।
এ সব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অস্ত্রের উৎস ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের তৎপরতা প্রতিরোধে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে র্যাব-১৫।
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাতে কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের ধাউনখালি এবং পৌরসভার কলাতলীর মেরিন ইকো রিসোর্ট থেকে বিদেশী অস্ত্র চোরাচালান চক্রের দুই সদস্যকে একটি বিদেশী পিস্তল ও একটি মডিফাইড.৩০৩ রাইফেল এবং এ্যামুনেশন সহ গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৫।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কক্সবাজার পৌরসভার বাহারছড়া এলাকার কাজি জাফর সাদেক ওরফে রাজু ও পিএমখালী ইউনিয়নের ধাওনখালী এলাকার হুমায় কবির।
র্যাব-১৫ জানায়,কক্সবাজার সদর পিএমখালীর ধাওনখালি গ্রামে একজন অস্ত্র ব্যবসায়ীর নিকট কিছু বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১৫ এর একটি বিশেষ টিম অভিযান পরিচালনা করে হুমায়ুন কবির নামে এক অস্ত্র ব্যবসায়ীকে তার শয়নকক্ষের খাটের তোষকের নিচ থেকে ২ রাউন্ড গুলি লোডেড অবস্থায় ১টি বিদেশী পিস্তল উদ্ধারসহ গ্রেফতার করে।
অস্ত্রের উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, এই অস্ত্রগুলো সে কলাতলীর রাজু নামক এক ব্যক্তির নিকট থেকে সংগ্রহ করে থাকে।
পরে এ তথ্যের ভিত্তিতে কাজী জাফর সাদিক রাজুর মালিকানাধীন কলাতলী-মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে অবস্থিত মেরিন ইকো রিসোর্টে অভিযান পরিচালনা করে রাজুর বিশ্রাম কক্ষ থেকে ১টি মডিফাইড .৩০৩ রাইফেল ও ৫ রাউন্ড এ্যামুনেশন’সহ রাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে রাজু জানায়, উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলো মূলত খাগড়াছড়ি সীমান্ত দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে বাংলাদেশে চোরাচালান করা হয়।
খাগড়াছড়ির স্থানীয় একটি চক্র এই অবৈধ অস্ত্র চোরাচালানের সাথে সম্পৃক্ত। তারা তাদের বিভিন্ন এজেন্ট এর মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে এই অস্ত্রগুলো সরবরাহ করে থাকে।
এই চক্রটি ৮০-৯০ হাজার টাকা মূল্যে একটি বিদেশি পিস্তল তাদের এজেন্টের নিকট বিক্রি করে।
পরবর্তীতে অস্ত্রগুলো বিভিন্ন হাত বদলে প্রান্তিক পর্যায়ে সন্ত্রাসীদের নিকট দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকা মূল্যে বিক্রয় করা হয়।
গ্রেফতারকৃত রাজু ফটিকছড়ির জাবেদ নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে এই অস্ত্রগুলো খাগড়াছড়ি থেকে সংগ্রহ করে থাকে।
আর গ্রেফতারকৃত হুমায়ুন সহ আরো কিছু ব্যক্তির মাধ্যমে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প, রামুর গর্জনিয়ার চোরাকারবারি চক্র ও মাদক ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসীদের নিকট দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকা মূল্যে এ সকল বিদেশি অস্ত্র দীর্ঘদিন ধরে বিক্রয় করে আসছে বলে জানায়।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত রাজু ও হুমায়ুন আরো জানায়, ২০২০ সালে মাদক মামলার গ্রেপ্তার হয়ে রাজু, হুমায়ুন এবং ফটিকছড়ির জাবেদ একই কারাগারে ছিলেন।
সেখানে তাদের পরিচয় এবং সখ্যতা গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে তারা জামিনে বের হয়ে এই অস্ত্র ব্যবসা শুরু করেন।
কাজী জাফর ছাদেক প্রকাশ রাজু এর রেকর্ডপত্র যাচাই করে ২টি মামলার তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১টি হলো মাদক মামলা এবং ১টি মারামারি মামলা।
অপরদিকে হুমায়ূন কবিরের রেকর্ডপত্র যাচাই করে মাদকসহ ৩টি মামলার তথ্য পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত রাজু এবং হুমায়ুনের তথ্যে যে সকল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের নাম উঠে এসেছে তাদের বিরুদ্ধে অচিরেই অভিযান পরিচালিত হবে।
র্যাব আরও জানায় গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
Posted ৬:৪৬ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta